সংশ্লিষ্ট সকল পরিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জ্ঞাতার্থে..
উপজেলার পটভূমি
গাবতলীর কৃতি সন্তান কৃষিবিদ ডঃ নাজমুল হুদা ‘গাবতলী নাম’ প্রসঙ্গে লিখেছেন, গাবতলী নামের ইতিহাস নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু তেমন করে নামের ইতিহাস বের করবার কাজ হয়েছে বলে দেখা যায় না। আর তাই কে নাম রাখলো, কিভাবে নাম রাখলো, কোন সময় নাম রাখা হলো এসব তথ্য সঠিকভাবে জানা যায়নি। কিন্তু যেভাবেই চেষ্টা করা হোক- কে নাম রাখলো, কিভাবে নাম রাখলো, কখন রাখা হলো এসব তথ্য বোধ করি এখন বের করা সম্ভব নয়। সম্ভব যা তা হচ্ছে ঘটনার একটি পরস্পরা সৃষ্টি করা। কিছু ঘটে যাওয়া ঘটনা, কিছু কিংবদন্ত- এ সবের সমন্বয় করে একটি ধারণা সৃষ্টি করা। গাবতলীর প্রবীন ব্যক্তি জনাব মোবারক আলী আখন্দ তার ‘গাবতলীর ইতিকথা’য় লিখেছেন- আজ থেকে ৪৫/৪৬ বৎসর আগের কথা আমার বয়স তখন হবে আনুমানিক ১০/১২ বৎসর (১৯৩২) সাল। ঈদের দিন গ্রামের মধ্যপাড়ার ঈদের মাঠে সদলবলে আমরা দক্ষিণ পাড়ার লোকজন নামায পড়তে যাচ্ছি। গ্রামের প্রায় মাঝামাঝি গিয়েই রাস্তার বাম পাশে একটি প্রকান্ড কিন্তু নেড়ে ডাল-পালা নেই বললেই চলে এমন পুরাতন গাব গাছের উপর নজর পড়ে। মুসল্লি দলের মধ্যে কথা হচ্ছিল যে এই গাব গাছের নাম অনুসারেই গাবতলী গ্রামের নামকরণ করা হয়েছে। এককালে গাবতলী এলাকায় প্রচুর গাব গাছ ছিল, যার নিদর্শন এখনও দেখা যায় গাবতলী গ্রামে। গাবতলী গ্রামের পিছন দিয়ে অর্থাৎ উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে বন-বাদাড় ছিল, ঘন গাছপালা ছিল। স্থানীয়ভাবে যা ‘আড়া’ নামে অভিহিত। সে আড়ার মধ্যে সব চেয়ে বেশী সংখ্যক চমকপ্রদ গাব গাছ প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম লাভ করত। ১৯০০ সালের গোড়ার দিকে গাবতলী গ্রামের পিছন দিকের নিচু জমি দিয়ে বড় বড় পাট বোঝাই নৌকা গাবতলী সদর থেকে উত্তর দিকে ইছামতি নদী দিয়ে পীরগাছা হাট হয়ে রংপুর জেলার দিকে চলাচল করত, দক্ষিণ দিকে পোড়াদহ হয়ে যমুনা নদীতেও চলাচল করত। প্রাচীন এই গ্রামের বিভিন্ন স্থানে তাই নৌকার তলার কাঠ পাওয়া যেত। নাম কিভাবে সৃষ্টি হলো এটিই আমাদের মূল প্রতিপাদ্য। তথ্য যেহেতু নেই সেহেতু আমরা কিংবদন্তীর উপর নির্ভর করতে পারি। ‘গাছের গাব লায়ের তলী এ্যাই লিয়া গাবতলী’ ‘লায়েল তলী’ অর্থাৎ নৌকার তলা। ‘লাও’ গাবতলীর কথা, যার অর্থ নৌকা। আর তলী মানে তলা। ‘মাটি কুয়া’ খুঁড়তে গিয়ে নৌকার কাঠ পেয়েছে অনেকে। এখনও মাটি কাটলে নৌকার কাঠ পাওয়া যায়। যার সম্ভাব্য কারণ- এ এলাকার মূল বাহণ ছিল নৌকা। গাবতলী এলাকাটি প্লাবিত জলরাশিতে নিমগ্ন ছিল, যার মধ্যে থেকে উঠে এসেছে এ ভূমি। কাজেই ‘গাছের গাব; লায়ের তলী, এ্যাই লিয়া’ গাবতলী এ শ্লোকটি হতে পারে গাবতলী নামকরণের একটি কার্যকারণ।
উপজেলার যোগাযোগ
গাবতলি উপজেলা বগুড়া শহর হতে উত্তরে প্রায় ০৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যোগাযোগ গাবতলী উপজেলা পরিষদে আসার ঠিকানাঃ বগুড়া জেলা থেকে গাবতলী উপজেলা পরিষদে আসার জন্য রেলপথ বা বাস অথবা সিএনজি ব্যবহার করতে পারবেন। ১.বগুড়া সরাসরি রেলপথের মাধ্যমে লোকাল অথবা মেইল ট্রেনে গাবতলী স্টেশনে আসতে পারবেন। ২. বগুড়া থেকে সরাসরি চেলোপাড়া সংলগ্ন সিএনজি অথবা বাস স্ট্যান্ড হতে গাবতলী উপজেলায় আসতে পারবেন। অপরদিকে পার্শ্ববর্তী সোনাতলা উপজেলা হতে সরাসরি সিএনজি অথবা ট্রেন যোগে আসতে পারবেন। অবস্থানঃ- উত্তর-দক্ষিণ লম্বাকৃতি গাবতলী উপজেলাটি ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে ২৪০৪৬ ডিগ্রি এবং ২৫০০১ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে ৮৯০২২ ডিগ্রি এবং ৮৯০৩৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। গাবতলী উপজেলার উত্তরে শিবগঞ্জ ও সোনাতলা, পূর্বে সারিয়াকান্দি, দক্ষিণে ধুনট এবং পশ্চিমে বগুড়া সদর ও শাজাহানপুর উপজেলা অবস্থিত।
এক নজরে গাবতলী উপজেলা
উপজেলায় উন্নীত- ১৯৮৩খ্রিঃ।
আয়তন- ২৩৯.৬০ বর্গ কিঃ মিঃ।
ভৌগলিক বিভাজনঃ
থানা-০১টি
পুলিশ ফাঁড়ি- ০১টি
পৌরসভা- ০১টি
ইউনিয়ন- ১১টি
মৌজা- ১০৬টি
গ্রাম- ২১৪টি
ওয়ার্ড নম্বর- ০৯টি
খানার সংখ্যা-
উপজেলায় মোট ৬৭, ৬৮৫টি
গ্রাম- ৬৬,৯৮২টি
শহর- ৪.৪
খানার আকার-
উপজেলায় গড়- ৪.৩
গ্রাম- ৪.৩
শহর- ৪.৪
জনসংখ্যা-
মোট- ২৯০১৯০জন
পুরুষ- ১৪৮৭২৭জন
মহিলা- ১৪১৪৬৩জন
গ্রামের সংখ্যা-
মোট- ২৮৭০৪৭জন
পুরুষ- ১৪৭১১০জন
মহিলা- ১৩৯৯৩৭
শহরে জনসংখ্যা-
মোটঃ ৩১৪৩জন
পুরুষ- ১৬১৭জন
মহিলা- ১৫২৬জন
জন ঘনত্ব- ১২১১জন/বর্গ কিঃমিঃ
পুরুষ মহিলার অনুপাত-
উপজেলাঃ ১০৫
গ্রামঃ ১০৬
শিক্ষার হার-
গড়ঃ ৩৯.৭
পুরুষঃ ৪৩.৪
মহিলাঃ ৩৫.৮
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-
১। প্রাথমিক বিদ্যালয়- সরকারিঃ ৯৩টি
রেজিঃ বে-সরকারি- ৬৫টি
নন রেজিঃ বেসরকারি- ০৩টি
কমিউনিটি-০২ কিন্ডার গার্টেন- ০৪টি
২। মাধ্যমিক বিদ্যালয়- সরকারি- ০১টি
বেসরকারি-০৩টি বালক বিদ্যলয়- ২৭টি
বালিকা বিদ্যালয়- ০৬টি
সমন্বিত বিদ্যালয়- নাই।
৩। কলেজ- ১০টি
(ক) সরকারি- ডিগ্রি কলেজ- ০১টি
(খ) বে-সরকারি ডিগ্রি কলেজ- ০৪টি
(গ) উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ- ০৩টি
(ঘ) স্কুল এন্ড কলেজ- ০১টি
বিজনেজ ম্যানেজমেন্ট কলেজ (বি.এম)- ০১টি
৪। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- ৬২টি
(ক) এবতেদায়ী মাদ্রাসা- ৩২টি
(খ) দাখিল মাদ্রাসা- ২২টি
(গ) সিনিয়র মাদ্রাসা- ০৮টি
যোগাযোগ ব্যবস্থা- মহাসড়ক- ২০.কিঃমিঃ পাকা রাস্তা- ১৫২.০০ কিঃমিঃ আধাপাকা- ৩.০০কিঃমিঃ কাঁচা রাস্তা- ৩৩০.০০ কিঃমিঃ রেল পথঃ ১০ কিঃমিঃ
রেলওয়ে স্টেশন-০২টি (গাবতলি ও সুখান পুকুর)
ব্রিজ- ৭০টি কালভার্ট- ৩২৭টি।
চিকিৎসা কেন্দ্র- ৫০ শর্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল- ০১টি, উপ-স্বাস্থ কেন্দ্র- ১১টি, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র- ১১টি, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র- ০২টি।
পোষ্ট অফিস- শাখা পোষ্ট অফিস- ০৫টি,
কোড নং ৫৮২০ (গাবতলি)।
উপসনালয়- মসজিদ- ৪৮৫টি, মন্দির- ২২টি, র্গীজা- নাই।
টেলিফোন এক্সচেঞ্জ- ০১টি, সংযোগ সংখ্যাঃ ১২৫টি। টেলিফোন কোডঃ ০৫০২৫।
আদর্শ গ্রাম- ০৮টি, পূনর্বাসিত পরিবার সংখ্যা- ৪০৬টি।
এতিম খানা- ০৪টি।
ব্যাংক-শাখাঃ সোনালী ব্যাংক- ০১টি, অগ্রণী ব্যাংক- ০২টি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক-০৪টি, রূপালী ব্যাংক- ০৪টি।
জেলা পরিষদ ডাক বাংলো- ০২টি, কক্ষ- ০৬টি।
ইউনিয়ন ভূমি অফিস- ০৮টি।
এনজিও এর সংখ্যা- ৩১টি।
খাদ্য গুদাম- ০৩টি।
তথ্য সূত্রঃ Bangladesh Bureau of Statistics-2001
গাবতলি নির্বাহি অফিস ও উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস গাবতলি, বগুড়া।
মিশন ও ভিশন
মিশনঃ দক্ষ, স্বচ্ছ এবং জনবান্ধব অফিস ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার মাধ্যমে কাঙ্খিত সেবা প্রদান। ভিশনঃ জনগনের দোরগোড়ায় প্রতিশ্রুত সেবা পৌঁছানো ও সু-শাসন নিশিতকরণ।